০৬:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

উদ্ধার অভিযান শেষ করছে তুরস্ক, নিখোঁজ এখনও বহু

উদ্ধার অভিযান শেষ করছে তুরস্ক, নিখোঁজ এখনও বহু

Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

আধুনিক যুগের ইতিহাসের মারাত্মক প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের প্রায় দুই সপ্তাহ পর রোববার ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্ক উদ্ধার প্রচেষ্টার অবসান ঘোষণা করছে। যদিও এখনও হাজার হাজার পরিবার কেবল শোক পালনের জন্য নিখোঁজ স্বজনের মৃতদেহ পাওয়ার আশায় প্রার্থনা করছে।

রোববার তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) বলছে, তুরস্ক-সিরিয়ায় চলতি মাসের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রায় দুই সপ্তাহ পর তুরস্কের বেশিরভাগ প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ৭ দশমিক ৮ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে তুরস্কের যে কয়েকটি শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কাহরামানমারাস সেসব শহরের একটি।

এই শহরের একটি ধসে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে বুলডোজার চালাচ্ছেন আকিন বোজকার্ট। তুর্কি এই বুুলডোজার অপারেটর বলেন, ‘আপনি কি একটি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবেন? আমরা করছি… ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে লাশ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা প্রার্থনা করছি।’

‘আপনি টনকে টন ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করলেন। পরিবার আশা নিয়ে অপেক্ষা করছে। তারা কেবল দাফন অনুষ্ঠান করতে চায়। তারা কেবল একটি কবর চায়।’

ইসলামি রীতি অনুযায়ী, মৃতকে যত দ্রুত সম্ভব দাফন করার বিধান রয়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) প্রধান ইউনুস সেজার বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা রোববার রাতে শেষ হবে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে এই প্রাণহানির সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই ৩ লাখ ৪৫ হাজারের মতো অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়েছে। এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে ভূমিকম্পের পর থেকে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন সেবিষয়ে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি তুরস্ক এবং সিরিয়া।

রোববার তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডির ভূমিকম্প ও ঝুঁকি হ্রাস বিভাগের মহাপরিচালক ওরহান তাতার বলেছেন, পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টটি পাঁচটি ভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে গেছে। কেবল মালাটিয়া প্রদেশেই ২৫ কিলোমিটার ফাঁটল পরিমাপ করা হয়েছে।

ভূপৃষ্ঠের ওপর প্রায় ৪০০ কিলোমিটার ফাটল দেখা দিয়েছে। এর ফলে ভূত্বকে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে। তুরস্কে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বড় যে ফাটলটি ধরা পড়েছে সেটি ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত; এর গভীরতা আট থেকে ৯ কিলোমিটার।

ভূমিকম্পের ১২ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে বের করার শেষ প্রচেষ্টা হিসাবে শনিবার রাতে আন্তাকিয়ার এক ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকারীদের হাত দিয়ে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। উদ্ধারকারীরা বলেছেন, প্রশিক্ষিত কুকুর ও থার্মাল ক্যামেরায় দুই ব্যক্তির জীবিত থাকার আলামত শনাক্ত হয়েছে শনিবার। কিন্তু উদ্ধার তৎপরতা শুরুর প্রায় ৮ ঘণ্টা পর মধ্যরাতে উদ্ধারকারীরা অভিযান স্থগিত করেন।

পরে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডির সদস্য মুজদাত এরদোয়ান বলেন, কেউ বেঁচে নেই। এসময় তার মুখ ও ইউনিফর্ম ধুলায় ঢাকা ছিল।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, আমরা আরও মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পারব।’

কিরগিজস্তানের উদ্ধারকারীরা দক্ষিণ তুরস্কের আন্তাকিয়ায় ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে পাঁচ সদস্যের সিরীয় একটি পরিবারকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। শনিবার সেখান থেকে শিশুসহ তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বলেছেন, মা ও বাবা বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে পানিশূন্যতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির বড় বোনকে বাঁচানো যায়নি।

লাখো মানুষের ত্রাণ সহায়তা দরকার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ভূমিকম্পের তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের জন্য জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দরকার। প্রাণঘাতী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ওয়াশিংটন কীভাবে আঙ্কারাকে আরও সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতে রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তুরস্কে পৌঁছেছেন।

সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ৫ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ডব্লিউএফপির পরিচালক ডেভিড বিসলে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সেখানকার কর্তৃপক্ষ আমাদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। এটার সমাধান করতে হবে।’

সিরিয়ায় বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। আর এই এলাকাটি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর সাথে লড়াইরত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ডেভিড বিসলে বলেছেন, ‘সময় ফুরিয়ে আসছে এবং আমাদের অর্থও ফুরিয়ে যাচ্ছে। কেবল ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমাদের মাসিক ৫ কোটি ডলারের তহবিলের কার্যক্রম চলছে। ইউরোপ যদি শরণার্থীদের নতুন ঢেউ দেখতে না চায়, তাহলে আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে।

 

Slide Up
x
Advertisements

বিজ্ঞাপন

পূবাইল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

দয়া করে এই ওয়েব সাইট থেকে কপি করার চেষ্টা বন্ধ করুন।

উদ্ধার অভিযান শেষ করছে তুরস্ক, নিখোঁজ এখনও বহু

প্রকাশ ১২:২৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

আধুনিক যুগের ইতিহাসের মারাত্মক প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের প্রায় দুই সপ্তাহ পর রোববার ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত তুরস্ক উদ্ধার প্রচেষ্টার অবসান ঘোষণা করছে। যদিও এখনও হাজার হাজার পরিবার কেবল শোক পালনের জন্য নিখোঁজ স্বজনের মৃতদেহ পাওয়ার আশায় প্রার্থনা করছে।

রোববার তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) বলছে, তুরস্ক-সিরিয়ায় চলতি মাসের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের প্রায় দুই সপ্তাহ পর তুরস্কের বেশিরভাগ প্রদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ৭ দশমিক ৮ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে তুরস্কের যে কয়েকটি শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কাহরামানমারাস সেসব শহরের একটি।

এই শহরের একটি ধসে যাওয়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে বুলডোজার চালাচ্ছেন আকিন বোজকার্ট। তুর্কি এই বুুলডোজার অপারেটর বলেন, ‘আপনি কি একটি মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করবেন? আমরা করছি… ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে লাশ পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা প্রার্থনা করছি।’

‘আপনি টনকে টন ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করলেন। পরিবার আশা নিয়ে অপেক্ষা করছে। তারা কেবল দাফন অনুষ্ঠান করতে চায়। তারা কেবল একটি কবর চায়।’

ইসলামি রীতি অনুযায়ী, মৃতকে যত দ্রুত সম্ভব দাফন করার বিধান রয়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এএফএডি) প্রধান ইউনুস সেজার বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতা রোববার রাতে শেষ হবে।

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ৪৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। তবে এই প্রাণহানির সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই ৩ লাখ ৪৫ হাজারের মতো অ্যাপার্টমেন্ট ধ্বংস হয়েছে। এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে ভূমিকম্পের পর থেকে ঠিক কতসংখ্যক মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন সেবিষয়ে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি তুরস্ক এবং সিরিয়া।

রোববার তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডির ভূমিকম্প ও ঝুঁকি হ্রাস বিভাগের মহাপরিচালক ওরহান তাতার বলেছেন, পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টটি পাঁচটি ভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়ে গেছে। কেবল মালাটিয়া প্রদেশেই ২৫ কিলোমিটার ফাঁটল পরিমাপ করা হয়েছে।

ভূপৃষ্ঠের ওপর প্রায় ৪০০ কিলোমিটার ফাটল দেখা দিয়েছে। এর ফলে ভূত্বকে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে। তুরস্কে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বড় যে ফাটলটি ধরা পড়েছে সেটি ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত; এর গভীরতা আট থেকে ৯ কিলোমিটার।

ভূমিকম্পের ১২ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে বের করার শেষ প্রচেষ্টা হিসাবে শনিবার রাতে আন্তাকিয়ার এক ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকারীদের হাত দিয়ে ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। উদ্ধারকারীরা বলেছেন, প্রশিক্ষিত কুকুর ও থার্মাল ক্যামেরায় দুই ব্যক্তির জীবিত থাকার আলামত শনাক্ত হয়েছে শনিবার। কিন্তু উদ্ধার তৎপরতা শুরুর প্রায় ৮ ঘণ্টা পর মধ্যরাতে উদ্ধারকারীরা অভিযান স্থগিত করেন।

পরে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এএফএডির সদস্য মুজদাত এরদোয়ান বলেন, কেউ বেঁচে নেই। এসময় তার মুখ ও ইউনিফর্ম ধুলায় ঢাকা ছিল।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না, আমরা আরও মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পারব।’

কিরগিজস্তানের উদ্ধারকারীরা দক্ষিণ তুরস্কের আন্তাকিয়ায় ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে পাঁচ সদস্যের সিরীয় একটি পরিবারকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। শনিবার সেখান থেকে শিশুসহ তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বলেছেন, মা ও বাবা বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে পানিশূন্যতার কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির বড় বোনকে বাঁচানো যায়নি।

লাখো মানুষের ত্রাণ সহায়তা দরকার

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ভূমিকম্পের তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের জন্য জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দরকার। প্রাণঘাতী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ওয়াশিংটন কীভাবে আঙ্কারাকে আরও সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতে রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তুরস্কে পৌঁছেছেন।

সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ৫ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ডব্লিউএফপির পরিচালক ডেভিড বিসলে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সেখানকার কর্তৃপক্ষ আমাদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। এটার সমাধান করতে হবে।’

সিরিয়ায় বেশিরভাগ প্রাণহানি ঘটেছে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। আর এই এলাকাটি প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর সাথে লড়াইরত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ডেভিড বিসলে বলেছেন, ‘সময় ফুরিয়ে আসছে এবং আমাদের অর্থও ফুরিয়ে যাচ্ছে। কেবল ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আমাদের মাসিক ৫ কোটি ডলারের তহবিলের কার্যক্রম চলছে। ইউরোপ যদি শরণার্থীদের নতুন ঢেউ দেখতে না চায়, তাহলে আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে।

 

Slide Up
x
Advertisements