০২:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিখোঁজ শাহরিয়ারের মা

‘ছেলে ফিরে না এলে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়েন’

ঢাকায় মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্প প্রকৌশলী নিখোঁজ শাহরিয়ার কবির

আমার একমাত্র ছেলে। ওর বাবা মারা গেছেন। এ ছেলে যদি না ফিরে আসে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলবেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন— ঢাকায় মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের প্রকৌশলী নিখোঁজ শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার সাহান।

এ ঘটনায় রাজধানীর তুরাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। রোববার (১২ ফেব্রুয়ায়রি) বিকেলে মেট্রোরেলের উত্তরা ডিপো অফিস থেকে বের হয়ে তিনি আর বাসায় ফেরেননি জিডিতে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন>>  এমআরটি প্রকল্পের প্রকৌশলী নিখোঁজ, থানায় জিডি

শাহরিয়ার এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী (তড়িৎ) হিসেবে কর্মরত। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ কৌশলে পড়াশোনা করেছেন। লালবাগের আজিমপুর টাওয়ারে একমাত্র মায়ের সঙ্গে তিনি থাকতেন। তাদের বাড়ি রাজশাহীর নগরীর বোয়ালিয়া থানা রাণীবাজার এলাকায়।

নিখোঁজ শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার বলেন, আমরা ১৩ বছর ধরে আজিমপুরে থাকি। রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় অফিসের গাড়ি এসেছিল বাসার নিচে। কোনো রকম রুটি খেয়েই দৌড় দেয় শাহরিয়া। এরপর বিকেল ৫টায় অফিস থেকে একা বের হয়ে বাসায় ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অফিস থেকে বের হলেও সঙ্গে থাকা মোবাইল, ল্যাপটপ ও ব্যাগ কিছুই নেয়নি। পরে রাতে অনেক খুঁজেও না পেয়ে আজ তুরাগ থানায় জিডি করেছি। শাপাশাশি বিষয়টি র‌্যাবকে (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) জানানো হয়েছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, বুয়েটে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির জন্য নিজে নিজে পরীক্ষা দিয়ে মেট্রোরেলে চাকরি হয় শাহরিয়ারের। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল মেট্রোরেল গড়বে। এজন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও মেট্রোরেল নিয়ে কাজ করছে। আমার ছেলে ছোট থেকে সংগ্রাম করে বড় হয়েছে। ওর বাবা অসুস্থ থাকার সময় হাসপাতালে দৌড়াদৌড়িসহ সবকিছু একাই করেছে। ছেলেকে নিয়েই সময় কাটতো আমার। সারাদিন রান্নাবান্নাসহ সবকিছু ছিল ছেলের জন্য। ছেলেকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।

জানতে চাইলে তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, সোমবার শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার সাহান থানায় জিডি করেছেন। পাশাপাশি এমআরটি প্রকল্পের পক্ষ থেকেও উত্তরা ডিপোর সিকিউরিটি ম্যানেজার একরামুল কবির হাওলাদারও একটি জিডি করেছেন।

তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাহরিয়ার কবির তার অফিসকক্ষ থেকে একা হেঁটে বের হন। অফিস কক্ষে তিনি তার নিজের মোবাইল ও ল্যাপটপটিও রেখে যান। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোবাইল ফোনে কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন, তা বিশ্লেষণ করে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

কী কারণে নিখোঁজ এ বিষয়ে পুলিশ কোনোকিছু জানতে পেরেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৮ বছর বয়সী শাহরিয়ার অবিবাহিত। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও অফিসসহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযোদ্ধাদের ‘মা’খ্যাত আক্তার নেসা আর নেই

দয়া করে এই ওয়েব সাইট থেকে কপি করার চেষ্টা বন্ধ করুন।

নিখোঁজ শাহরিয়ারের মা

‘ছেলে ফিরে না এলে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়েন’

প্রকাশ ০২:৪৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আমার একমাত্র ছেলে। ওর বাবা মারা গেছেন। এ ছেলে যদি না ফিরে আসে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলবেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন— ঢাকায় মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের প্রকৌশলী নিখোঁজ শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার সাহান।

এ ঘটনায় রাজধানীর তুরাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। রোববার (১২ ফেব্রুয়ায়রি) বিকেলে মেট্রোরেলের উত্তরা ডিপো অফিস থেকে বের হয়ে তিনি আর বাসায় ফেরেননি জিডিতে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন>>  এমআরটি প্রকল্পের প্রকৌশলী নিখোঁজ, থানায় জিডি

শাহরিয়ার এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পে সহকারী প্রকৌশলী (তড়িৎ) হিসেবে কর্মরত। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ কৌশলে পড়াশোনা করেছেন। লালবাগের আজিমপুর টাওয়ারে একমাত্র মায়ের সঙ্গে তিনি থাকতেন। তাদের বাড়ি রাজশাহীর নগরীর বোয়ালিয়া থানা রাণীবাজার এলাকায়।

নিখোঁজ শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার বলেন, আমরা ১৩ বছর ধরে আজিমপুরে থাকি। রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় অফিসের গাড়ি এসেছিল বাসার নিচে। কোনো রকম রুটি খেয়েই দৌড় দেয় শাহরিয়া। এরপর বিকেল ৫টায় অফিস থেকে একা বের হয়ে বাসায় ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অফিস থেকে বের হলেও সঙ্গে থাকা মোবাইল, ল্যাপটপ ও ব্যাগ কিছুই নেয়নি। পরে রাতে অনেক খুঁজেও না পেয়ে আজ তুরাগ থানায় জিডি করেছি। শাপাশাশি বিষয়টি র‌্যাবকে (র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন) জানানো হয়েছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, বুয়েটে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির জন্য নিজে নিজে পরীক্ষা দিয়ে মেট্রোরেলে চাকরি হয় শাহরিয়ারের। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল মেট্রোরেল গড়বে। এজন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও মেট্রোরেল নিয়ে কাজ করছে। আমার ছেলে ছোট থেকে সংগ্রাম করে বড় হয়েছে। ওর বাবা অসুস্থ থাকার সময় হাসপাতালে দৌড়াদৌড়িসহ সবকিছু একাই করেছে। ছেলেকে নিয়েই সময় কাটতো আমার। সারাদিন রান্নাবান্নাসহ সবকিছু ছিল ছেলের জন্য। ছেলেকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।

জানতে চাইলে তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, সোমবার শাহরিয়ার কবিরের মা রাশিদা আক্তার সাহান থানায় জিডি করেছেন। পাশাপাশি এমআরটি প্রকল্পের পক্ষ থেকেও উত্তরা ডিপোর সিকিউরিটি ম্যানেজার একরামুল কবির হাওলাদারও একটি জিডি করেছেন।

তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাহরিয়ার কবির তার অফিসকক্ষ থেকে একা হেঁটে বের হন। অফিস কক্ষে তিনি তার নিজের মোবাইল ও ল্যাপটপটিও রেখে যান। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোবাইল ফোনে কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন, তা বিশ্লেষণ করে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

কী কারণে নিখোঁজ এ বিষয়ে পুলিশ কোনোকিছু জানতে পেরেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৮ বছর বয়সী শাহরিয়ার অবিবাহিত। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও অফিসসহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।