০৬:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

দলীয় ভাবে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ করছে প্রার্থীরা

দলীয় ভাবে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ করছে প্রার্থীরা

Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

দেশের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে বইছে নির্বাচনী হওয়া। নির্বাচন কে সামনে রখে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীরা। সর্ব মহলে এখন চর্চা হচ্ছে কে হতে চলেছেন তৃতীয়বারের মতো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র? নগরবাসী বলছেন, শোষণ শাসনের নগর পিতা চান না তারা, চায় নগরবাসীর কাছের মানুষ। যে নগরবাসীর সকল নাগরিক সমস্যা দূর করে উন্নত ও আধুনিক নগর উপহার দেওয়ার জন্য করবে ক্লান্ত পরিশ্রম।

নির্বাচন কমিশন এর তফসিল সূত্র জানাগেছে, আগামী ২৫ মে দেশের সব চেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন গাজীপুরের ভোট গ্রহন করবে ইসি। এরপরই রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করবে ইসি। এবার সব সিটি কর্পোরেশনের ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে।

আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থীততা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মোট ৬ নেতা। এছাড়াও মেয়র পদে জাতীয় পার্টির গাজীপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক সেক্রেটারি এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থীতা অনেকটা নিশ্চিত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। তবে বিএনপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রার্থীততা এখনো প্রকাশ পায়নি। আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের এই ৬ নেতা হলো, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক টঙ্গী পৌরসভার মেয়র এড. আজমত উল্লা খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহাসান সরকার রাসেল, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও গুঞ্জন রয়েছে আসন্ন নির্বাচনে আবারও মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক বরখাস্তকৃত মেয়র এড. জাহাঙ্গীর আলম।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড.আজমত উল্লাহ খান বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন খুবই সন্নিকটে। আপনারা জানেন আমার স্থানীয় সরকার বিভাগে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। গাজীপুর নগরীর মানুষ আমাকে চায়, দলীয় লোক আমাকে চায়। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচরণা চলছে। আমি দল থেকে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন চাইবো। আশা করি দল আমাকে নমিনেশন দেবে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সব পেশার মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে। নগরবাসী আমাকে ভালোবাসেন। তাদের ইচ্ছার মূল্য দিতে আগামী নিবার্চনে অংশ নিতে প্রার্থী হতে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা বিনির্মাণে অতীতের মত কাজ করে যাবো।

অপরদিকে মেয়র নমিনেশন পাওয়া জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ। ২০১৩ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তৎকালিন বিরোধী দলের হয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী এড. আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে মেয়র হন অধ্যাপক এম এ মান্নান। তবে ৩ মাস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হয় অধ্যাপক মান্নান। সে সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসেন ৪৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারী দলীয় প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান এড. জাহাঙ্গীর আলম। বিরোধী দল বিএনপি’র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকাকে পরাজিত করেন জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় মেয়র নির্বাচিত হয়। তিন বছরের মত দায়িত্ব পালন করে সাময়িক বরখাস্ত হন সরকারী দলের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজ ঘরে বসে রাষ্ট্রদ্রোহীমূলক কথাবার্তা বলেছেন। পরবর্তি সময় ওই অডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে শুরু হয় আন্দোলন। সরকারী দলের লোকজন সরকারী দলের মেয়রকে সরানোর জন্য আন্দোলন করে রাজপথে। এক পর্যায়ে মেয়র ও দলীয় পদও হারান জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর পূনরায় দ্বিতীয় বারের মতো দায়িত্ব পান আসাদুর রহমান কিরণ। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়র যখন চেয়ার ছাড়া তখন দায়িত্ব পালন করেন কাউন্সিলর কিরণ। এতে নিঃসন্দেহে কিরন ভাগ্যবান। কারণ একবারও মেয়র নির্বাচন না করে দুই বার মেয়রের চেয়ারে বসার সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি টঙ্গীর জনপ্রিয় কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ।

সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে প্রচারণ-প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। গুঞ্জন রয়েছেন তার নির্বাচিত ওয়ার্ড ৪৩ নং থেকে এবার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করবে তার আপন ভাতিজা খালিদুর রহমান রাসেল। আর তাকে পূর্ণ সমর্থন করছেন কাউন্সিলর কিরণ।

আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, আমি শূন্য হাতে এই সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। সেই সিটি করপোরেশন এখন স্বচ্ছ ও সুন্দর হয়েছে। সামনে নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী যাকে নমিনেশন দেবেন আমরা তার হয়েই কাজ করবো।

এদিকে বেশ জোরে জোরে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী ও ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ উপ কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল আল মামুন মন্ডল। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মতবিনিময় সভা গণসংযোগ সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে নগরবাসী কি দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।

মেয়র প্রার্থী আব্দুল আল মামুন মন্ডল বলেন, দল যোগ্য মনে করে যদি মনোনয়ন দেন তাহলে কথা দিচ্ছি এই নগরবাসী একটি যোগ্য নগর সেবক পাবে। যার যে দিনরাত সাগর বাসির নাগরিক সেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিশ্রম করবে।

গাজীপুরের মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহাসান সরকার রাসেলকে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেবে কিনা সে নিয়ে গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক চর্চা। বিগত দিনে নানামুখী জনসেবা মূলক কর্মকান্ডগুলো চুয়ে গেছে এই নগরবাসীর মন। কাউন্সিলর কিংবা মেয়র না হয়েও এই নগরবাসীর পানির সমস্যা, জলাবদ্ধতা, ঘর নির্মাণ, এতিম অসহায় শিশুদের শিক্ষাসহ যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ কার্যক্রম গুলো এই নগরবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছে। শুধু জনসাধারন নয় দলিয় নেতাকর্মীরাও তার কার্যক্রম নিয়ে রিতিমতো গর্ববোধ করেন। গাজীপুরের অধিকাংশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দাবি তরুণ ও কর্মঠ রাসল সরকার কে যেনো দেওয়া হয় দলীয় মনোনয়ন। নেতাকর্মীর আশা করছেন, আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাসেল সরকারকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত করা হলে রূপকথার মত বদলে যাবে গাজীপুরের বর্তমান দৃশ্যপট।

গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহসান সরকার রাসেল বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের তত্ত্বাবধানে গাজীপুরের মাটিতে রাজনীতি করে আসছি। দীর্ঘ রাজনীতি জীবনে কেউ আমায় কোন কলমকে কলুষিত করতে পারিনি। আমি নগরপিতা নয় নগরবাসীর সেবক হয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নাগরিক সমস্যা দূর করতে চাই। আমি নগরপিতা হয়ে অহংকার অহংবোধ আবৃত্ত নিয়ে চলতে চাইনা আমি মানুষের সেবা করে বাকি জীবনটা পার করতে চাই। যেন মৃত্যুর পরেও এই নগরবাসী আমাকে মনে রাখে। আমি নামে নয় কর্মে এই নগরবাসীর মনে হাজার বছর বেঁচে থাকতে চাই। গড়ে যেতে চাই বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবে সোনার বাংলা।

এদিকে অপর আরেক মেয়র পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম আধুনিক নগর উপহার দেওয়ার আশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, বিগত দিনে আমি রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলাম। আমি আশা করছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমি মনোনয়ন পেলে। এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে বিগত দিনের চেয়ে অনেকটাই উন্নত হবে এই নগরী।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম বদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা কারণে মানুষ অতিষ্ঠ। যার ফলে গাজীপুরবাসী জাতীয় পার্টিকে ভোট দেবে। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও গত নিবার্চনে বিএনপির প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে দল আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। যার ফলে নির্বাচন প্রচরণা বা অংশগ্রহণ করার প্রশ্নই আসে না। তবে দল নির্বাচন করতে চাইলে আমি নিশ্চিত প্রার্থী হবো।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পীর সাহেব চরমোনাই মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। নিরপেক্ষ প্রশাসন ও নির্বাচন চাই। যাতে এই সিটি কর্পোরেশন মানুষ ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারেন।

Slide Up
x
Advertisements

বিজ্ঞাপন

পূবাইল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

দয়া করে এই ওয়েব সাইট থেকে কপি করার চেষ্টা বন্ধ করুন।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন

দলীয় ভাবে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ করছে প্রার্থীরা

প্রকাশ ০২:৫২:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

দেশের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে বইছে নির্বাচনী হওয়া। নির্বাচন কে সামনে রখে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন এই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থীরা। সর্ব মহলে এখন চর্চা হচ্ছে কে হতে চলেছেন তৃতীয়বারের মতো গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র? নগরবাসী বলছেন, শোষণ শাসনের নগর পিতা চান না তারা, চায় নগরবাসীর কাছের মানুষ। যে নগরবাসীর সকল নাগরিক সমস্যা দূর করে উন্নত ও আধুনিক নগর উপহার দেওয়ার জন্য করবে ক্লান্ত পরিশ্রম।

নির্বাচন কমিশন এর তফসিল সূত্র জানাগেছে, আগামী ২৫ মে দেশের সব চেয়ে বড় সিটি কর্পোরেশন গাজীপুরের ভোট গ্রহন করবে ইসি। এরপরই রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করবে ইসি। এবার সব সিটি কর্পোরেশনের ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে।

আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থীততা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মোট ৬ নেতা। এছাড়াও মেয়র পদে জাতীয় পার্টির গাজীপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক সেক্রেটারি এম এম নিয়াজ উদ্দিনের প্রার্থীতা অনেকটা নিশ্চিত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। তবে বিএনপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রার্থীততা এখনো প্রকাশ পায়নি। আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের এই ৬ নেতা হলো, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক টঙ্গী পৌরসভার মেয়র এড. আজমত উল্লা খান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহাসান সরকার রাসেল, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও গুঞ্জন রয়েছে আসন্ন নির্বাচনে আবারও মেয়র পদে নির্বাচন করতে পারেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক বরখাস্তকৃত মেয়র এড. জাহাঙ্গীর আলম।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড.আজমত উল্লাহ খান বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন খুবই সন্নিকটে। আপনারা জানেন আমার স্থানীয় সরকার বিভাগে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। গাজীপুর নগরীর মানুষ আমাকে চায়, দলীয় লোক আমাকে চায়। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচরণা চলছে। আমি দল থেকে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন চাইবো। আশা করি দল আমাকে নমিনেশন দেবে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সব পেশার মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে। নগরবাসী আমাকে ভালোবাসেন। তাদের ইচ্ছার মূল্য দিতে আগামী নিবার্চনে অংশ নিতে প্রার্থী হতে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা বিনির্মাণে অতীতের মত কাজ করে যাবো।

অপরদিকে মেয়র নমিনেশন পাওয়া জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ। ২০১৩ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তৎকালিন বিরোধী দলের হয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী এড. আজমত উল্লা খানকে পরাজিত করে মেয়র হন অধ্যাপক এম এ মান্নান। তবে ৩ মাস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার হয় অধ্যাপক মান্নান। সে সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসেন ৪৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকারী দলীয় প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান এড. জাহাঙ্গীর আলম। বিরোধী দল বিএনপি’র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকাকে পরাজিত করেন জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় মেয়র নির্বাচিত হয়। তিন বছরের মত দায়িত্ব পালন করে সাময়িক বরখাস্ত হন সরকারী দলের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজ ঘরে বসে রাষ্ট্রদ্রোহীমূলক কথাবার্তা বলেছেন। পরবর্তি সময় ওই অডিও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে শুরু হয় আন্দোলন। সরকারী দলের লোকজন সরকারী দলের মেয়রকে সরানোর জন্য আন্দোলন করে রাজপথে। এক পর্যায়ে মেয়র ও দলীয় পদও হারান জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা আদালতে চলমান রয়েছে। মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীরকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর পূনরায় দ্বিতীয় বারের মতো দায়িত্ব পান আসাদুর রহমান কিরণ। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়র যখন চেয়ার ছাড়া তখন দায়িত্ব পালন করেন কাউন্সিলর কিরণ। এতে নিঃসন্দেহে কিরন ভাগ্যবান। কারণ একবারও মেয়র নির্বাচন না করে দুই বার মেয়রের চেয়ারে বসার সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি টঙ্গীর জনপ্রিয় কাউন্সিলর আসাদুর রহমান কিরণ।

সাম্প্রতিক সময়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আসন্ন তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে প্রচারণ-প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। গুঞ্জন রয়েছেন তার নির্বাচিত ওয়ার্ড ৪৩ নং থেকে এবার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করবে তার আপন ভাতিজা খালিদুর রহমান রাসেল। আর তাকে পূর্ণ সমর্থন করছেন কাউন্সিলর কিরণ।

আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, আমি শূন্য হাতে এই সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। সেই সিটি করপোরেশন এখন স্বচ্ছ ও সুন্দর হয়েছে। সামনে নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী যাকে নমিনেশন দেবেন আমরা তার হয়েই কাজ করবো।

এদিকে বেশ জোরে জোরে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদপ্রার্থী ও ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ উপ কমিটির সাবেক সদস্য আব্দুল আল মামুন মন্ডল। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মতবিনিময় সভা গণসংযোগ সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে নগরবাসী কি দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।

মেয়র প্রার্থী আব্দুল আল মামুন মন্ডল বলেন, দল যোগ্য মনে করে যদি মনোনয়ন দেন তাহলে কথা দিচ্ছি এই নগরবাসী একটি যোগ্য নগর সেবক পাবে। যার যে দিনরাত সাগর বাসির নাগরিক সেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিশ্রম করবে।

গাজীপুরের মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহাসান সরকার রাসেলকে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেবে কিনা সে নিয়ে গাজীপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক চর্চা। বিগত দিনে নানামুখী জনসেবা মূলক কর্মকান্ডগুলো চুয়ে গেছে এই নগরবাসীর মন। কাউন্সিলর কিংবা মেয়র না হয়েও এই নগরবাসীর পানির সমস্যা, জলাবদ্ধতা, ঘর নির্মাণ, এতিম অসহায় শিশুদের শিক্ষাসহ যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ কার্যক্রম গুলো এই নগরবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছে। শুধু জনসাধারন নয় দলিয় নেতাকর্মীরাও তার কার্যক্রম নিয়ে রিতিমতো গর্ববোধ করেন। গাজীপুরের অধিকাংশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দাবি তরুণ ও কর্মঠ রাসল সরকার কে যেনো দেওয়া হয় দলীয় মনোনয়ন। নেতাকর্মীর আশা করছেন, আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে রাসেল সরকারকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত করা হলে রূপকথার মত বদলে যাবে গাজীপুরের বর্তমান দৃশ্যপট।

গাজীপুর মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব কামরুল আহসান সরকার রাসেল বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের তত্ত্বাবধানে গাজীপুরের মাটিতে রাজনীতি করে আসছি। দীর্ঘ রাজনীতি জীবনে কেউ আমায় কোন কলমকে কলুষিত করতে পারিনি। আমি নগরপিতা নয় নগরবাসীর সেবক হয়ে সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নাগরিক সমস্যা দূর করতে চাই। আমি নগরপিতা হয়ে অহংকার অহংবোধ আবৃত্ত নিয়ে চলতে চাইনা আমি মানুষের সেবা করে বাকি জীবনটা পার করতে চাই। যেন মৃত্যুর পরেও এই নগরবাসী আমাকে মনে রাখে। আমি নামে নয় কর্মে এই নগরবাসীর মনে হাজার বছর বেঁচে থাকতে চাই। গড়ে যেতে চাই বঙ্গবন্ধুর কর্মী হিসেবে সোনার বাংলা।

এদিকে অপর আরেক মেয়র পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম আধুনিক নগর উপহার দেওয়ার আশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন, বিগত দিনে আমি রাজনীতির পাশাপাশি সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলাম। আমি আশা করছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আমি মনোনয়ন পেলে। এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে বিগত দিনের চেয়ে অনেকটাই উন্নত হবে এই নগরী।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম বদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা কারণে মানুষ অতিষ্ঠ। যার ফলে গাজীপুরবাসী জাতীয় পার্টিকে ভোট দেবে। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও গত নিবার্চনে বিএনপির প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে দল আমাদের এখনো কিছু জানায়নি। এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। যার ফলে নির্বাচন প্রচরণা বা অংশগ্রহণ করার প্রশ্নই আসে না। তবে দল নির্বাচন করতে চাইলে আমি নিশ্চিত প্রার্থী হবো।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পীর সাহেব চরমোনাই মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। নিরপেক্ষ প্রশাসন ও নির্বাচন চাই। যাতে এই সিটি কর্পোরেশন মানুষ ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারেন।

Slide Up
x
Advertisements