গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ৩৮ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকা সত্বেও নিয়ম অনুযায়ী এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে বিদ্যুৎ সংযোগ না কাটার ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে বিদ্যুৎ সংযোগ না কাটার প্রতিবাদে এবং গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর জড়িত কর্মকর্তাদের সমিতি থেকে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে আন্তর্জাতিক ভাষা আন্দোলন পরিষদ।
বুধবার, (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে গাজীপুর জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ এর আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩৭ লাখ ২৫ হাজার ৫৭০ টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। গত ৪ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুহম্মদ শাহীন রেজা ফরাজি স্বাক্ষরিত চিঠিটি তাকে দেওয়া হয়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া টাকা পল্লী বিদ্যুতের অনুকূলে জমা দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন চারতলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবনে ১১টি মিটার স্থাপন করা রয়েছে। এসব মিটারের ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত বকেয়া রয়েছে ১০ লাখ ২৫ হাজার ৭৪৬ টাকা। এ ছাড়া ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ওই ভবনে মিটারবিহীন সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ বিল বাবদ বকেয়া রয়েছে ২৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮২৪ টাকা। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার তাগাদা দিলেও তা পরিশোধ করেননি জাহাঙ্গীর আলম।
চিঠি পাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ২০২০ সালে এই ভবনটি কিনে নেই। এ ছাড়া মিটারগুলোও আমার নামে ইস্যু করা নেই। আগের মালিকের জরিমানা আমাকে কেন দিতে হবে? এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’
এদিকে জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টিকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করায় তা গাজীপুরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জম্ম দেয়।
নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতা (জাহাঙ্গীর আলম) ক্রয়ের পর পরই নিজ দায়িত্বে জমির নামজারি জমাভাগ, সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং রেকর্ড হালনাগাদ ও হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ এবং বিদ্যুত সংযোগগুলো নিজ নামে স্থানান্তর করবেন বা নতুন সংযোগ নিবেন। কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম কিসের উদ্দেশ্যে পুরনো মালিকের নামীয় বিদ্যুত সংযোগ তার নিজের বাড়িতে ব্যবহার করছেন- এসব আলোচনাই এখন জেলাবাসীর মুখে মুখে। তিনি অন্যের নামের বিদ্যুত সংযোগে ২৬ লাখ ৯৯ হাজার ৮২৪ টাকার বিদ্যুৎ বিলের ভোগবিলাস করেছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে বক্তারা বলেন, এটা জাহাঙ্গীরের বিদ্যুত চুরির নতুন ফন্দি। জাহাঙ্গীর আলমকে দেওয়া গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চিঠিতে পরিষ্কার বলা আছে যে, জাহাঙ্গীরের ভবনে ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ওই ভবনে মিটারবিহীন সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। তিনি জেনে বুঝেই এসব করেছেন।
আন্তর্জাতিক ভাষা আন্দোলন পরিষদের সভাপতি মো. আতিক মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর ৩ আসনের, সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী।
উপস্থিত ছিলেন গণ ফ্রন্টের গাজীপুর জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরনবী সরদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণ ফ্রন্টের সাভার থানা কমিটির সভাপতি মো. নূরুল আমীন।
উপস্থিত ছিলেন গণ ফ্রন্টের গাজীপুর জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক , সদর থানা কমিটির শেখ সাইফুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ভাষা আন্দোলন পরিষদের সহ-সভাপতি, মো. ফারুক হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আলী, সুলতান প্রমুখ।