০৫:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মেহেরপুরের পানিতে ভয়াবহ আর্সেনিক

মেহেরপুরের পানিতে ভয়াবহ আর্সেনিক

Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

মেহেরপুরের কয়েকটি গ্রামের নলকুপের পানিতে পাওয়া গেছে ভয়াবহ মাত্রায় আর্সেনিক। ওই সব গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এ আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করে ধীরে ধীরে মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করছে। বিভিন্ন সংস্থা একাধিকবার কয়েকটি গভীর নলকুপ স্থাপন করলেও সেগুলো নষ্ট হওয়ায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। তবে কতটি টিউবয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে আর কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী।

নব্বই দশকের পর মেহেরপুর জেলার মানুষ আর্সেনিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। জেলার ষোলটাকা, ভোলাডাঙ্গা, কোদাইলকাটি, কেশবনগর সহগলপুর ও মানিকদিয়া গ্রামসহ আর্সেনিক আক্রান্ত অন্ততঃ ১০ গ্রামের মানুষ। ওই সমস্ত গ্রামের পানিতে ৩০০ পিপিবি মাত্রার আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলেছেন চিকিৎসকবৃন্দ। আর্সেনিকের কারণে গ্রামে অনেকেই আত্মীয়তা করতে চান না। গ্রামের নারী পুরুষেরা দেহে ক্ষত নিয়ে জিবন যাপন করছেন।

জনস্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন এনজিওর দেওয়া নিরাপদ পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। এগুলো সচল করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরনা দিয়েও কোন ফল হয়নি। স্থানীয়দের দেওয়া হিসাবে গাংনীর বিভিন্ন গ্রামে গত ১০ বছরে এই রোগে মারা গেছেন অন্ততঃ ২৫ ন নারী পুরুষ। আক্রান্ত কয়েক হাজার। তাদের অভিযোগ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাদের কোন খোঁজই রাখেন না। বছর খানেক আগে নলকুপের পানি পরীক্ষা করে লাল আর সবুজ রং লাগিয়ে দ্বায়িত্ব শেষ করে। সু-পেয় পানির ব্যবস্থা করে না।

ভোলাডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ জানান, বছর দশেক আগে গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত পানির ব্যবস্থা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৗশল অফিস। মাস ছয়েক পর সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। বারবার জনস্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলাপ করেও তারা কোন ব্যবস্থা নেন নি। একই কথা জানালেন, বদর উদ্দীন আলম ও গৃহবধু রাজিয়া। তারা জানান, এখানকার মানুষের হাতে পায়ে ও গায়ে ফোড়া হতে দেখে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভাল না হওয়ায় শহরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া হয়। পরীক্ষা করে জানা যায় এ রোগের নাম আর্সেনিক। ডাক্তার পানি পান নিষেধ করলেও সেটি সম্ভব হয়নি। পানির ব্যবস্থা না করে পানি পান নিষিদ্ধ করলে সেটি কি মানা সম্ভব ? এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।

গাংনী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাহাফুজুর রহমান জানান, উপজেলার ৬০ভাগ টিউবয়েল পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে ৪৫ভাগ আর্সেনিক পাওয়া গেছে। তবে ১০ টি গ্রামে আর্সেনিকের পরিমান বেশি। বিভিন্ন এনজিও যে কুপ স্থাপন করেছিল সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামের লোকজন এ গুলো ভাল ভাবে ব্যবহার করে না। সতর্ক ও সজাগ না হলে কারো কিছু করা থাকেনা। তারপরও অকেজো নলকুপগুলো সচল করার ব্যবস্থা করা হবে।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে আর্সেনিকোসিস রোগীর সংখ্যা থাকলেও মৃতের পরিসংখ্যান নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জেলায় আর্সেনিকোসিস রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ৭৯ জন। আর্সেনিক আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন আর কেউ চিকিৎসা নিতে আসতে চান না। তবে রোগিরা আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Slide Up
x
Advertisements

বিজ্ঞাপন

পূবাইল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

দয়া করে এই ওয়েব সাইট থেকে কপি করার চেষ্টা বন্ধ করুন।

মেহেরপুরের পানিতে ভয়াবহ আর্সেনিক

প্রকাশ ০৩:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩
Advertisements
Advertisements
Advertisements
Advertisements

মেহেরপুরের কয়েকটি গ্রামের নলকুপের পানিতে পাওয়া গেছে ভয়াবহ মাত্রায় আর্সেনিক। ওই সব গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এ আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করে ধীরে ধীরে মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করছে। বিভিন্ন সংস্থা একাধিকবার কয়েকটি গভীর নলকুপ স্থাপন করলেও সেগুলো নষ্ট হওয়ায় বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। তবে কতটি টিউবয়েলে আর্সেনিক পাওয়া গেছে আর কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী।

নব্বই দশকের পর মেহেরপুর জেলার মানুষ আর্সেনিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করেন। জেলার ষোলটাকা, ভোলাডাঙ্গা, কোদাইলকাটি, কেশবনগর সহগলপুর ও মানিকদিয়া গ্রামসহ আর্সেনিক আক্রান্ত অন্ততঃ ১০ গ্রামের মানুষ। ওই সমস্ত গ্রামের পানিতে ৩০০ পিপিবি মাত্রার আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলেছেন চিকিৎসকবৃন্দ। আর্সেনিকের কারণে গ্রামে অনেকেই আত্মীয়তা করতে চান না। গ্রামের নারী পুরুষেরা দেহে ক্ষত নিয়ে জিবন যাপন করছেন।

জনস্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন এনজিওর দেওয়া নিরাপদ পানির উৎসগুলো নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগেই। এগুলো সচল করতে সংশ্লিষ্টদের কাছে ধরনা দিয়েও কোন ফল হয়নি। স্থানীয়দের দেওয়া হিসাবে গাংনীর বিভিন্ন গ্রামে গত ১০ বছরে এই রোগে মারা গেছেন অন্ততঃ ২৫ ন নারী পুরুষ। আক্রান্ত কয়েক হাজার। তাদের অভিযোগ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর তাদের কোন খোঁজই রাখেন না। বছর খানেক আগে নলকুপের পানি পরীক্ষা করে লাল আর সবুজ রং লাগিয়ে দ্বায়িত্ব শেষ করে। সু-পেয় পানির ব্যবস্থা করে না।

ভোলাডাঙ্গা গ্রামের মাসুদ জানান, বছর দশেক আগে গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত পানির ব্যবস্থা করে জনস্বাস্থ্য প্রকৗশল অফিস। মাস ছয়েক পর সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। বারবার জনস্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলাপ করেও তারা কোন ব্যবস্থা নেন নি। একই কথা জানালেন, বদর উদ্দীন আলম ও গৃহবধু রাজিয়া। তারা জানান, এখানকার মানুষের হাতে পায়ে ও গায়ে ফোড়া হতে দেখে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ভাল না হওয়ায় শহরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া হয়। পরীক্ষা করে জানা যায় এ রোগের নাম আর্সেনিক। ডাক্তার পানি পান নিষেধ করলেও সেটি সম্ভব হয়নি। পানির ব্যবস্থা না করে পানি পান নিষিদ্ধ করলে সেটি কি মানা সম্ভব ? এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।

গাংনী উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাহাফুজুর রহমান জানান, উপজেলার ৬০ভাগ টিউবয়েল পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে ৪৫ভাগ আর্সেনিক পাওয়া গেছে। তবে ১০ টি গ্রামে আর্সেনিকের পরিমান বেশি। বিভিন্ন এনজিও যে কুপ স্থাপন করেছিল সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামের লোকজন এ গুলো ভাল ভাবে ব্যবহার করে না। সতর্ক ও সজাগ না হলে কারো কিছু করা থাকেনা। তারপরও অকেজো নলকুপগুলো সচল করার ব্যবস্থা করা হবে।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে আর্সেনিকোসিস রোগীর সংখ্যা থাকলেও মৃতের পরিসংখ্যান নেই। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জেলায় আর্সেনিকোসিস রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ৭৯ জন। আর্সেনিক আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন আর কেউ চিকিৎসা নিতে আসতে চান না। তবে রোগিরা আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Slide Up
x
Advertisements